কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের বাসা থেকে সাইফ মোহাম্মদ আলী নামে এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় আতঙ্কে স্ট্রোক করে তার বাবা সামছুল আলম মামুন (৫২) মারা যান।
সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র।
নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আইনজীবীর হেফাজতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাবার জানাজায় অংশ নিতে আদালত তাকে জামিন দেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সাইফ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। মঙ্গলবার রাতে সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতারে অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। বাবা সামছুল আলম মামুন তাকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যেতে বাধা দেন।
তার ছেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা পরোয়ানা আছে কি না তা পুলিশের কাছে জানতে চান তিনি। কিন্তু কোনো উত্তর না দিয়ে সাইফকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ছেলের শোকে ও আতঙ্কে তিনি স্ট্রোক করেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাইফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তার জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। পরে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামিন দেন আদালত। এ সময় বাবার নামাজে জানাজায় অংশ নেন সাইফ মোহাম্মদ আলী।
তার আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ বলেন, সাইফ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। পুলিশের দায়ের করা নাশকতা ও বিস্ফোরকের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো মামলা বা পরোয়ানা ছাড়াই তাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার বাবা সামছুল আলম মামুন ছেলেকে তুলে দিতে পুলিশকে বাধা দেন। সাইফকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেলে বাড়িতে আতঙ্কে মামুন মারা যায়।
সাইফ মোহাম্মদ আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করেন, সাইফ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ ছেলেটিকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। আমি সবকিছু হারিয়েছি। আমার কিছুই অবশিষ্ট নেই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াশিল মজুমদার ফারুক বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর কথাও শুনেছি। সাইফ ছাড়াও আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।