3 মিনিটে পড়ুনবাগেরহাটে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতি, ম্যুরাল ও লেখা অপসারণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নগরীর বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা ও আঁকা মুছে ফেলতে দেখা গেছে ৮-১০ জনকে। এ সময় তাদের পাশে ছিলেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ের দেয়ালে কোটা আন্দোলনের পক্ষে শিক্ষার্থীদের লেখা ও আঁকা ছবি মুছে ফেলতে থাকে। দেয়ালে অনেক কিছু লেখা থাকলেও পুরো দেয়ালে রং করা হচ্ছে না। শুধু যে জায়গাগুলোতে শিক্ষার্থীরা লিখেছিল এবং আঁকছিল সেগুলো ব্রাশের সাহায্যে রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এ কাজে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নিজেদের বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানের নির্দেশে তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ১৯ জুলাই বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রী হত্যার প্রতিবাদে এবং আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিদ্যালয়ের দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান লিখে বিক্ষোভ করে। ‘বুকে বড় ঝড়, বুকে গুলি লেগেছে’, ‘ধরতে পারি না, পারি না’, ‘শিক্ষায় ক্ষতি, টাকা নেই, মান নেই, হীরার রাজা স্মার্ট’সহ লেখাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯ জুলাই। , ‘রক্তের দাম চাই’ দিনের বেলায় আঁকা গ্রাফিতিও সরাতে দেখা যায়।
ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী কয়েকজন পথচারী জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ৮-১০ জন তরুণী স্কুলের দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান লিখেছিলেন, ‘আমার ভাই কেন মারা গেল? ম্যুরাল আঁকাও শুরু করেন। কিছু সময় সেখানে দেওয়ালে ছবি তোলেন সাদা পোশাকের এক পুলিশ সদস্য। এ সময় কয়েকজন তরুণী লুকিয়ে যায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর মোটরসাইকেলে থাকা আরেক পুলিশ সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তরুণীরা আবারও সেখানে এসে কিছুক্ষণ রং করেন। এদিকে বেলা ১১টার দিকে পুলিশের একটি গাড়ি সেখানে আসে। কিন্তু তার আগেই যে তরুণীরা ছবি আঁকা ও ম্যুরাল লেখেন তারা এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি জানি না।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই স্থানীয় বাসিন্দা জানান, দুপুরের পর ডিএসবি (জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা) নামে পরিচিত এক ব্যক্তি তার মোবাইল ফোনে ছবি আঁকা ও লেখালেখিতে অংশ নেওয়া ছাত্রীদের ছবি দেখান এবং জিজ্ঞাসা করেন। তাদের পরিচয় জানি। চলমান পরিস্থিতিতে তরুণীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
দেয়ালে গ্রাফিতি মুছে দেওয়া একজন নিজেকে বালিকা বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বলে পরিচয় দেন। দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতি অপসারণের বিষয়ে জানতে চাইলে মোঃ তহিদুল ইসলাম নামের এই ব্যক্তি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের প্রধান এটা ভালো করেই জানেন। দেয়ালে লেখা অপসারণের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতা রানী বিশ্বাস বলেন, অনেক আগে থেকেই দেয়ালে কোনো কিছু লেখা নিষিদ্ধ। দেয়ালে লেখা দেয়ালটিকে নোংরা দেখায়, তাই মুছে ফেলা হয়।
কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা মমতা রানী বিশ্বাস জানালেও, দেওয়ালে এখনও শুভ জন্মদিন লেখা রয়েছে।